সৌদিতে বাপ-ছেলে একসঙ্গে নির্যাতন করে কাজের মহিলাদের

”রাতে গোসল করিয়ে আমারে পাতলা ফিনফিনে কাপড় পরতে দেয়। আমি পাতলা কাপড় পরতে না চাইলে মারধর শুরু করে। এরপর আমার ঘরে প্রথমে আসে ছেলে, পরে আসে বাপ। তারপর আমারে…।” এভাবেই সৌদি আরবে থাকাকালীন নির্যাতনের ঘটনাগুলো বর্ণনা করছিলেন সেখান থেকে ফেরত আসা নারী শ্রমিক ময়না বেগম। তাদের বর্ণনায় উঠে এসেছে নারী শ্রমিকদের ওপর ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতনের চিত্র। আর সেই নির্যাতনে শামিল হন একই পরিবারের একাধিক সদস্য। কখনো দুই ভাই, কখনো বাবা-ছেলে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল, শপিং মল, রেস্ট্যুরেন্টে চাকরি দেওয়ার কথা বলে নারীদের মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হলেও অধিকাংশ নারীর জায়গা হয় বিভিন্ন পরিবারে গৃহপরিচারিকার কাজে। আর সেখানে অনেকটা দাসী হয়ে পার করতে হয় দিন। প্রতিবাদ করলে নেমে আসে অকথ্য নির্যাতন। দেশে ফিরতে চাইলেও অনেক সময় সে সুযোগ মেলে না। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাকে একটি বাড়িতে কাজের জন্য নেওয়া হয় এবং শিকার হতে হয় নির্যাতনের। ‘প্রথমে আমাকে বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে নিতে আসেন দুই পুরুষ। দেখে ভয় পাই। পরে ওই বাড়িতে ঢুকে যখন এক মহিলা দেখি তখন মনে সাহস আসে। কিন্তু রাতে গোসল করিয়ে আমারে পাতলা ফিনফিনে কাপড় পরতে দেয়। আমি পাতলা কাপড় পরতে না চাইলে মারধর শুরু করে। এরপর আমার ঘরে প্রথমে আসে ছেলে, পরে আসে বাপ। তারপর আমারে জড়ায়ে ধরে নির্যাতন করে। বাধা দিতে গেলে আমারে মাইরা-ধইরা, কামড়াইয়া-ছিমড়াইয়া কিছু রাখে নাই। ’ গতকাল ঢাকায় ওই গণশুনানিতে নিজের ওপর সৌদি আরবে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের কথাগুলো এভাবেই বলছিলেন ময়না বেগম। অভিবাসী বা পাচার হয়ে যাওয়া নারীদের আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রধান সালমা আলী বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে অভিবাসী নারী শ্রমিকদের মধ্যে ৯৯ শতাংশই শারীরিক-মানসিক সব ধরনের নির্যাতনের শিকার। অনেক শ্রমিক সেখানে নির্যাতনের মুখে মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ’ গণশুনানিতে প্রদান করা তথ্যানুসারে, ১৯৯১ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৬ লাখ ৭৪ হাজার নারী শ্রমিক বিভিন্ন দেশে গেছেন।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শিক্ষক ছাত্রী কঠিন প্রেম, এলাকায় তোলপাড়

বাঙ্গালী ডাঃ শিউলি স্বামী ছাড়াই সন্তানের মা হলেন !

চরমোনাই পীরের মুরিদ শিশু ধর্ষণকারী খুনি মোবারক গ্রেফতার